অরনীলা আমান।
ভোরের ফোনটা আমার জন্য একটা উপহার ছিল।
আমাকে ফোনের ওপাশ থেকে জানানো হলো,কেউ একজন কিছুক্ষণ আগে ঢাকা রেল স্টেশনে এসে পৌঁছেছে। আদরের রাজকন্যার ঘুম সেদিন একটা ফোনেই চলে গিয়েছিল।
কিছু কিছু দিন মানুষের জন্য নতুন সূর্য ওঠে।সেদিন ছিল তেমনই একটা দিন।
বহুদিন পর আমি চোখে কাজল দিলাম,নাকফুল পড়লাম।পছন্দের রঙয়ের শাড়ি পড়লাম,চুড়ি পড়লাম।আড়পাশে একটা খোঁপা।
রাস্তার ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটাকে দেখে আমার তাকে জড়িয়ে ধরা উচিত ছিল হয়ত।কিন্তু আমি তার পাশেই বসতে পারিনি।
এটা আসলে আমাদের প্রথম দেখা।
চলে আসার সময় আমার মন খারাপ করে থাকার কথা হলেও আমি তাকে হাসি মুখে বিদায় দিয়েছিলাম।যার হাসি মুখ দেখে কেউ বাড়ি ফেরার শক্তি পায় তার মন খারাপ করে থাকা মানায় না।
চলে আসার সময় মনে হয়েছিল মানুষটার সাথে চলে যাই।কে জানে হয়ত এটাই আমাদের প্রথম এবং শেষ দেখা!বছর ঘুরতে ঘুরতে কিংবা ঘড়ির কাটা নড়তে নড়তে কেউ না কেউ চলে যেতে পারি ওপারে!
কতবার ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হয়েছে তাকে।কিন্তু পারিনি আমি।কে বলতে পারে তাকে ছুঁয়ে দেখার অধিকার হয়ত অন্য কোন নারী পাবে!
কতবার তার চোখের ভাষা পড়তে চেয়েছি।আমার জন্য ভালোবাসা দেখতে চেয়েছিলাম চোখে।কিন্তু চোখের দিকে তাকাতেই পারলাম না। কে জানে হয়ত কোন এক দিন এই ভালোবাসা ঘৃণায় পরিনত হবে।
কতবার ওই চওড়া কাধে মাথা রাখিতে চেয়েছি।এত অনেক দূরের কথা।হাতই ধরতে পারলাম না।
দুহাত দিয়ে গাল ধরে বলতে চেয়েছিলাম “ভালোবাসি” কিন্তু বলতে পারিনি।হতেও তো পারে আমার কাছ থেকে ভালোবাসি শোনার আগ্রহ থাকবে না।
কিন্তু আমি কিছুই পারলাম না।
এক জীবনে সব চাওয়া পূর্ণ হয় না।কিছু অপূর্ণতা থেকেই যায়। বেঁচে থাকতে হলে অপূর্ণতা নিয়েই বাঁচতে হয় আমাদের।
“অপূর্ণতা”
অরনীলা আমান।
Comments
Post a Comment